Probas Report
Bongosoft Ltd.
ঢাকা রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১৫ পৌষ ১৪৩১

রিশ্রমের বিকল্প নেই

প্রবাস রিপোর্ট |  মো. আখতার হোসেন আজাদ এপ্রিল ১১, ২০২৩, ০২:২৬ পিএম রিশ্রমের বিকল্প নেই

পৃথিবীতে কেউ সাফল্যের চামচ নিয়ে জন্মলাভ করে না। কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে সবকিছু অর্জন করতে হয়।

প্রবাদ আছে, ‘পরিশ্রম সাফল্যের চাবিকাঠি’। পরিশ্রমের দ্বারা ভাগ্যের চাবিকাঠি এমনভাবে পরিবর্তন করা সম্ভব, যা অলস মানুষের কাছে অলৌকিক বলে মনে হয়। যে কোনো ক্ষেত্রে সফলতার প্রথম শর্ত হল প্রবল ইচ্ছাশক্তি ও কঠোর পরিশ্রম।

মানুষ যদি তার লক্ষ্যে অটুট থাকে এবং সেই অনুযায়ী কাজ করে, তবে একদিন সে সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছতে পারে। আমাদের চারপাশে অনেক প্রতিভাবান ব্যক্তি দেখতে পাই।

পৃথিবীর ইতিহাসে অনেক সফল ব্যক্তির নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা আছে। যুগে যুগে, কালে কালে যারা স্মরণীয় ও বরণীয় হয়েছেন, প্রকৃতপক্ষে তাদের সাফল্যের পেছনে লুকিয়ে আছে কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যবসায়। আধুনিক বিশ্বে যা কিছু আবিষ্কার হয়েছে সবই পরিশ্রমের ফসল।

মানুষ কোনো কাজে প্রথমবারেই সাফলতা লাভ নাও হতে পারে। দীর্ঘদিনের পরিশ্রম বা নিরবচ্ছিন্ন পরিশ্রমের ফলেই ধরা দেয় কাক্সিক্ষত সাফল্য। কোনো কাজে ব্যর্থ হলে তাতে হতাশ না হয়ে সেই কাজে কঠোর মনোনিবেশ করলে সফল হওয়া অবশ্যই সম্ভব।

একজন ছাত্র কঠোর অধ্যয়নের মাধ্যমেই ভালো ফলাফল করে থাকে। একজন কৃষক রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে চাষ করেন বলেই হাসিমুখে ফসল উত্তোলন করেন।

কিছু মানুষ বিশ্বাস করে, প্রতিভা বা ভাগ্যের দ্বারা অসাধ্য সাধন করা যায়। কিন্তু পৃথিবীতে যারা কীর্তিমান, তারা প্রতিভার চেয়ে কঠোর পরিশ্রমকেই গুরুত্ব দিয়েছেন বেশি।

পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ কোনো জাতির ভাগ্য পরিবর্তন করেন না, যতক্ষণ সে নিজের ভাগ্য নিজের কর্মের দ্বারা পরিবর্তন না করে।’ প্রখ্যাত বিজ্ঞানী স্যার আইজ্যাক নিউটন বলেছেন, সাফল্যের মাত্র দুই ভাগ হল প্রতিভা আর বাকি আটানব্বই ভাগই হল কঠোর পরিশ্রম।

সৃষ্টিকর্তা প্রত্যেক মানুষকেই প্রতিভা দিয়ে সৃষ্টি করেছেন, যা তাদের ভেতর সুপ্ত অবস্থায় থাকে।

যে ব্যক্তি কঠোর চিন্তা ও পরিশ্রমের দ্বারা এই সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ ঘটাতে পারবেন, তিনিই সফলতা অর্জন করবেন। ব্রিটিশ বিজ্ঞানী জন ডাল্টনকে সবাই প্রতিভাবান বলে সম্বোধন করতেন, অথচ তিনি নিজেকে কঠোর পরিশ্রমী হিসেবে পরিচয় দিতেন।

তার পিতা ছিলেন একজন সামান্য তাঁতী। নিজের চেষ্টা ও কঠোর পরিশ্রমের দ্বারা বিখ্যাত এটমিক থিওরি আবিষ্কার করেন তিনি। লিটল মাস্টার খ্যাত ক্রিকেটার শচীন টেন্ডুলকার বলেছেন, ‘যখন কঠোর পরিশ্রম করবে, ভাগ্য তোমার সহায় হবে। জীবনে চ্যালেঞ্জ থাকবেই। সেই চ্যালেঞ্জগুলো অতিক্রম করেই ভাগ্যকে সহায় করে নিতে হয়।’

স্কটল্যান্ডের রাজা রবার্ট বুশ পরপর ছয়বার যুদ্ধে হেরেও কঠোর পরিশ্রম আর ইচ্ছাশক্তির বলে সপ্তমবারে জয়লাভ করেছেন। ইসলাম ধর্মের প্রচারক হযরত মুহাম্মদ (সা.) মক্কার কাফেরদের অনেক অত্যাচারের পরও সত্য ধর্ম প্রচার থেকে বিরত হননি।

মুঘল রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা বাবর প্রথম জীবনে রাজ্য থেকে বিতাড়িত হলেও পরবর্তীকালে সমগ্র ভারতবর্ষের সম্রাট হতে পেরেছিলেন কেবল পরিশ্রমের ফলে।

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিঙ্কন মুচির কাজ করতেন। টমাস আলভা এডিসনকে ছেলেবেলায় সবাই ‘গাধা’ বলে তিরস্কার করত। ফুটবলার লিওনেল মেসি একসময় নিজের ফুটবলের ট্রেনিংয়ের খরচ জোগাতে চায়ের দোকানে কাজ করতেন। কঠোর পরিশ্রমের ফলেই তারা বিশ্বখ্যাত হতে পেরেছেন।

পরিশ্রমহীন ব্যক্তিদের পরিণতি অতীব করুণ হয়। প্রবাদ আছে, ‘অলস মস্তিষ্ক শয়তানের কারখানা’। পরিশ্রমহীন মানুষ সবার কাছে নিগৃহীত হয়। তাই সফলতার পথে এগিয়ে যেতে আমাদের কঠোর পরিশ্রমী হতে হবে।

মো. আখতার হোসেন আজাদ : শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া

ayadiu71@gmail.com

 

 

Side banner