Probas Report
Bongosoft Ltd.
ঢাকা রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১৫ পৌষ ১৪৩১

আল্লাহর কাছে কিছু চাইলে তিনবার চাওয়া সুন্নত

প্রবাস রিপোর্ট ডিসেম্বর ৪, ২০২২, ০৪:৪৫ পিএম আল্লাহর কাছে কিছু চাইলে তিনবার চাওয়া সুন্নত

ইসলামে দোয়ার গুরুত্ব অনেক। দোয়াকে বলা হয়েছে ইবাদতের মগজ। হাদিস অনুযায়ী, যে ব্যক্তি দোয়া করে তার প্রতি আল্লাহ সন্তুষ্ট হন, আর যে করে না, তার ওপর তিনি অসন্তুষ্ট হন। দোয়ার কিছু আদব রয়েছে। এর মধ্যে একটি মাসনুন আদব হচ্ছে- আল্লাহ তাআলার কাছে কোনো কিছু চাইলে অনেকটা নাছোড়বান্দার মতো একই সময়ে বারবার চাওয়া। বিশেষত তিনবার চাওয়া। হাদিসে এসেছে, নবীজি (স.) যেকোনো দোয়া তিনবার করে করতেন।

আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘একবার রাসুল (স.) বায়তুল্লাহর কাছে সালাত আদায় করছিলেন। সেখানে আবু জেহেল ও তার সঙ্গীরা বসা ছিল। আগের দিন উট জবাই করা হয়েছিল। এমন সময় আবু জেহেল বলে উঠল, তোমাদের মধ্যে কে অমুক গোত্রের উটনির নাড়িভুঁড়ি এনে মুহাম্মদ যখন সেজদা করবে, তার পিঠের উপর রাখতে পারবে? তখন কওমের সবচেয়ে নিকৃষ্ট লোকটি দ্রুত গিয়ে উটনির নাড়িভুঁড়ি নিয়ে এল এবং রাসুল (স.) যখন সেজদায় গেলেন তখন সেগুলো তাঁর দুই কাঁধের মাঝখানে রেখে দিল। বর্ণনাকারী বলেন, তারা নিজেরা হাসতে থাকল। হাসতে হাসতে একে অন্যের ওপর হেলে পড়ল। আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছিলাম। হায়! আমার যদি প্রতিরোধ করার ক্ষমতা থাকত তাহলে আমি রাসুলুল্লাহ (স.)-এর পিঠ থেকে এগুলো ফেলে দিতাম। রাসুল (স.) সেজদায় পড়ে থাকলেন। মাথা উঠালেন না। এক পর্যায়ে এক লোক গিয়ে ফাতেমা (রা.)-কে খবর দিল।

খবর শুনে তিনি ছুটে এলেন। সেসময় ফাতেমা (রা.) ছিলেন ছোট বালিকা। তিনি এসে উটের নাড়িভুঁড়ি তাঁর (নবীজির) পিঠ থেকে ফেলে দিলেন। এরপর লোকদের দিকে মুখ করে তাদেরকে গালমন্দ করলেন। অতঃপর রাসুল (স.) যখন তাঁর সালাত শেষ করলেন, তখন তিনি কণ্ঠস্বর উঁচু করলেন এবং তাদের বিরুদ্ধে বদদোয়া করলেন। তিনি যখন দোয়া করতেন তখন তিনবার করতেন এবং যখন প্রার্থনা করতেন তখন তিনবার করতেন। এরপর বললেন, হে আল্লাহ! আপনি কুরাইশকে ধ্বংস করুন। এভাবে তিনবার বললেন। তারা যখন তাঁর কণ্ঠস্বর শুনতে পেল তাদের হাসি মিলিয়ে গেল এবং তারা তাঁর বদদোয়াকে ভয় পেল। এরপর তিনি বললেন, হে আল্লাহ! আবু জেহেল ইবনে হিশাম, ওতবা ইবনে রবিয়া, শায়বা ইবনে রবিয়া, ওয়ালিদ ইবনে উকবা, উমাইয়া ইবনে খালাফ ও উকবা ইবনে আবু মুয়াইতকে ধ্বংস করুন। (রাবি বলেন, তিনি সপ্তম ব্যক্তির নামও বলেছিলেন কিন্তু আমি স্মরণ রাখতে পারিনি)।

সেই সত্তার কসম! যিনি মুহাম্মদ (স.)-কে সত্যসহ প্রেরণ করেছেন, রাসুল (স.) যাদের নাম উচ্চারণ করেছিলেন, আমি বদর যুদ্ধের দিন তাদেরকে নিহত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেছি। পরবর্তীতে তাদেরকে টেনেহিঁচড়ে বদরের কূপের মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়।’ (বুখারি: ২৪০; মুসলিম: ১৭৯৪)

উল্লেখ্য, দোয়ার অন্য আদবগুলো হলো- একনিষ্ঠভাবে দোয়া করা, আল্লাহর সুন্দর নাম ও গুণাবলীর মাধ্যমে তাঁর প্রশংসাসহ দোয়া করা, নবীজির উপর দরুদ পড়া, কেবলামুখী হওয়া, দুহাত উঠিয়ে দোয়া করা, দোয়া কবুলের ব্যাপারে নিশ্চিত বিশ্বাস রাখা, দৃঢ়তার সঙ্গে দোয়া করা, বারবার প্রার্থনা করা, অনুনয়-বিনয়, আশা ও ভয় সহকারে দোয়া করা। তবে মনে রাখতে হবে যে, জীবিকা হালাল হওয়া এবং তাওহিদপন্থী হওয়া দোয়া কবুলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শর্ত।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে দোয়ার সকল আদব মেনে দোয়া করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Side banner