বড় ধরনের আইনি ঝামেলায় জড়িয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সাবেক পর্নো তারকাকে ঘুষ দেওয়ার মামলায় অভিযুক্ত হয়েছেন তিনি। এ জন্য তাঁকে আত্মসমর্পণ করতেও বলা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আইনি ঝামেলা মোকাবিলায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অর্থ সংগ্রহের পথ বেছে নিয়েছে ট্রাম্পের প্রচারণা দল। ফেসবুকে দেওয়া হয়েছে বিজ্ঞাপন। খবর সিএনবিসির
যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়তে চান ট্রাম্প। এ জন্য অনলাইন–অফলাইনে প্রচারণা শুরু করেছেন তিনি। তাঁর এই প্রচারণা দলের পক্ষ থেকে গতকাল শুক্রবার ফেসবুকে তিনটি বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। এসব বিজ্ঞাপনে ট্রাম্পের তহবিলে সমর্থকদের রাত ১১টা ৫৯ মিনিটের মধ্যে ন্যূনতম ৪৭ ডলার করে দিতে বলা হয়।
ফেসবুকে দেওয়া বিজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, এ অর্থের বিনিময়ে ট্রাম্প সমর্থকেরা একটি টি–শার্ট পাবেন। তাতে লেখা থাকবে, ‘আই স্ট্যান্ড উইথ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প’। এর মধ্য দিয়ে সমর্থকদের উদ্দেশ্যে ‘চলমান অন্ধকার সময়ে আন্দোলনকে রক্ষা করতে সাহায্য করার’ আহ্বান জানানো হয়েছে।
প্রায় ৩ কোটি ৪০ লাখ ফেসবুক অনুসারী রয়েছে ট্রাম্পের। যদিও তিনি টানা দুই বছর এই সামাজিক মাধ্যমে নিষিদ্ধ ছিলেন। ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ওয়াশিংটনে ক্যাপিটল ভবনে হামলার ঘটনার জেরে তাঁকে নিজেদের প্ল্যাটফর্মে নিষিদ্ধ করেছিল ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ উঠেছিল, সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে ওই হামলা চালাতে নিজের সমর্থকদের উসকে দিয়েছিলেন ট্রাম্প।
সপ্তাহ দুয়েক আগে নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেসবুকে ফিরেছেন ট্রাম্প। আগামী নির্বাচনের আগে প্রচারণার কাজে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটির ব্যবহারও শুরু করেছেন তিনি। এর মধ্যেই বড় ধরনের আইনি বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন তিনি।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় সাবেক পর্নো তারকা স্টরমি ড্যানিয়েলসকে তাঁর পক্ষ থেকে মোটা অঙ্কের ঘুষ দেওয়া হয়েছিল। স্টরমি ড্যানিয়েলসের দাবি, ২০০৬ সালে ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর যৌন সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। ২০১৬ সালের নির্বাচনের আগে এ নিয়ে মুখ না খুলতে তাঁকে মোটা অঙ্কের ঘুষ দেওয়া হয়েছিল। ট্রাম্পের সাবেক আইনজীবী মাইকেল কোহেন তাঁকে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার দিয়েছিলেন।
এই ঘটনায় নিউইয়র্ক সিটির গ্র্যান্ড জুরি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের সিদ্ধান্ত জানায়। তবে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কী অভিযোগ আনা হয়েছে, তা এখনো প্রকাশ করা হয়নি। তাঁকে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়। আগামী মঙ্গলবার বিকেলে শুনানিতে অংশ নিতে আদালতে যাওয়ার কথা রয়েছে ট্রাম্পের। এ সময় গ্রেপ্তার করা হতে পারে তাঁকে।
উল্লেখ্য, ডোনাল্ড ট্রাম্প হলেন প্রথম কোনো সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট যিনি ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত হয়েছেন। গ্রেপ্তারের ঝুঁকির মুখে পড়েছেন। সেই সঙ্গে গ্রেপ্তার হলে তাঁর সঙ্গে অন্য আসামিদের মতো করেই আচরণ করা হবে কি না, ট্রাম্প ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণা চালিয়ে যেতে পারবেন কি না—এসব নিয়ে আলোচনা চলছে।
আপনার মতামত লিখুন :