Probas Report
Bongosoft Ltd.
ঢাকা শুক্রবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৫, ২৭ চৈত্র ১৪৩১

কারামুক্তি পেলেন হোটেল রুয়ান্ডার ‘নায়ক’

প্রবাস রিপোর্ট | অনলাইন ডেস্ক মার্চ ২৫, ২০২৩, ০৩:১৩ পিএম কারামুক্তি পেলেন হোটেল রুয়ান্ডার ‘নায়ক’

রুয়ান্ডা সরকারের সমালোচক হিসেবে পরিচিত পল রুসেসাবাগিনা কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। ৯০০ দিনের বেশি সময় কারাবন্দী থাকার পর গতকাল শুক্রবার মুক্তি পেয়েছেন তিনি। সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে তাঁর ২৫ বছরের কারাদণ্ড হয়েছিল। সাজার মেয়াদ কমিয়ে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

১৯৯৪ সালে রুয়ান্ডায় গণহত্যা চলার সময় ১ হাজার ২০০ মানুষের জীবন বাঁচাতে পেরেছিলেন রুসেসাবাগিনা। তাঁর অভিজ্ঞতার আলোকে হলিউডে ‘হোটেল রুয়ান্ডা’ নামের চলচ্চিত্রটি নির্মিত হয়েছে। সেখানে তাঁকে বীর হিসেবে দেখানো হয়।
১০০ দিন ধরে ওই গণহত্যা চলাকালে রুয়ান্ডার প্রায় ৮ লাখ মানুষ নিহত হন। রুসেসাবাগিনা রুয়ান্ডার প্রেসিডেন্ট পল কাগামের কঠোর সমালোচক হয়ে ওঠেন। এমন অবস্থায় তাঁকে রাষ্ট্রের শত্রু হিসেবে বিবেচনা করা শুরু হয়।

রুসেসাবাগিনার বিরুদ্ধে ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্টকে (এফএলএন) সমর্থন দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়। ২০১৮ ও ২০১৯ সালে রুয়ান্ডায় হামলা চালিয়ে ৯ জনকে হত্যার জন্য এ বিদ্রোহী গোষ্ঠীটিকে দায়ী করা হয়ে থাকে। ২০২০ সালের আগস্টে রুসেসাবাগিনাকে বহনকারী বুরুন্ডিগামী একটি উড়োজাহাজের পথ পাল্টে রুয়ান্ডায় নিয়ে যাওয়ার পর তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনাকে অপহরণ উল্লেখ করে জাতিসংঘ ক্ষোভ জানায়।

৬৮ বছর বয়সী রুসেসাবাগিনা শারীরিকভাবে অসুস্থ। পরিবার বলেছে, ৯৩৯ দিন আটক থাকা অবস্থায় তাঁর ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে।

রুয়ান্ডা সরকারের মুখপাত্র ইয়োলান্ডে মাকোলো এএফপিকে বলেন, প্রেসিডেন্টের আদেশক্রমে তাঁর সাজার মেয়াদ কমানো হয়েছে। তাঁর সঙ্গে সাজা পাওয়া আরও ১৯ জন আসামিরও সাজার মেয়াদ কমানো হয়েছে।

এক মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, গতকাল মধ্যরাতের আগে আগে রুসেসাবাগিনা কিগালিতে কাতারের রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে পৌঁছান। কয়েক দিন সেখানেই থাকবেন তিনি। এর পর কাতারের উদ্দেশে রওনা হবেন। কাতারের মধ্যস্থতাতেই রুসেসাবাগিনা মুক্তি পেয়েছেন।
চলতি মাসের শুরুতে দোহায় রুয়ান্ডার প্রেসিডেন্ট পল কাগামে দোহায় কাতারের কাতারের আমিরের সঙ্গে বৈঠক করেন। মামলাটি নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র ও কাতার দুই পক্ষের ভূমিকারই প্রশংসা করেছে রুয়ান্ডা। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র রুসেসাবাগিনার মুক্তির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে।

১৯৯৬ সালে রুসেসাবাগিনা রুয়ান্ডা ছেড়ে স্ত্রী সন্তানসহ বেলজিয়ামে চলে যান। তাঁর বেলজিয়ামের নাগরিকত্বও আছে। প্রায় এক দশক পর ২০০৪ সালে তাঁর জীবনকাহিনি অবলম্বনে ‘হোটেল রুয়ান্ডা’ নির্মিত হয়। এতে রুসেসাবাগিনার চরিত্রে অভিনয় করেছেন ডন চিয়াডলি।

১৯৯৪ সালে রুয়ান্ডার হুতু ও তুতসি সম্প্রদায়ের মধ্যকার উত্তেজনা গৃহযুদ্ধে পরিণত হয়। হুতুরা নির্বিচারে তুতসিদের হত্যা করছিল। তখন রুসেসাবাগিনা কিগালির একটি হোটেলে ব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ করতেন। হোটেল গেটের বাইরে যখন গণহত্যা চলছিল, তখন নিজের পরিবারের সদস্যসহ অনেক মানুষকে তিনি হোটেলের ভেতর আশ্রয় দিয়ে গণহত্যার হাত থেকে বাঁচাতে সক্ষম হন। হোটেল রুয়ান্ডা মুক্তি পাওয়ার পর রুসেসাবাগিনা রাতারাতি তারকা খ্যাতি অর্জন করেছিলেন।

Side banner