Probas Report
Bongosoft Ltd.
ঢাকা সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১৫ পৌষ ১৪৩১

এসব লক্ষণ দেখলে বুঝতে হবে শিশুটির জন্মগত হৃদ্রোগ আছে

প্রবাস রিপোর্ট | আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি জন্মগত হৃদ্‌রোগবিষয়ক সচেতনতা দিবস। ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৩, ১০:৪০ এএম এসব লক্ষণ দেখলে বুঝতে হবে শিশুটির জন্মগত হৃদ্রোগ আছে

মায়ের গর্ভে থাকার সময় শিশুর হৃদ্যন্ত্র তৈরি ও বিকশিত হয়। এর আগেই যদি হৃদ্যন্ত্রে কোনো প্রকার ত্রুটি হয় এবং নবজাতক সেই ত্রুটিপূর্ণ হৃদ্যন্ত্র নিয়ে জন্মায়, তাহলে তাকে জন্মগত হৃদ্রোগ বলে। ত্রুটিপূর্ণ হৃদ্যন্ত্র নিয়ে জন্মানো শিশুর সংখ্যা বিশ্বে কম নয়। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার প্রকাশিত তথ্যমতে, বিশ্বে প্রতি এক হাজার শিশুর মধ্যে ন্যূনতম ৮ জন জন্মগত হৃদ্রোগ নিয়ে জন্মায়। শিশুদের ক্ষেত্রে এই রোগের প্রকোপ মৃদু থেকে তীব্র হতে পারে। বাংলাদেশে শিশুদের মধ্যে এই রোগের বৃদ্ধির হার বেশ উদ্বেগজনক। জন্মগত হৃদ্রোগের মধ্যে রয়েছে হৃদ্যন্ত্রের ছিদ্র, ভালভের সংকোচন, প্রধান রক্তনালি সংকোচন, চারটি হৃৎকুঠুরির স্থানে তিনটি বা দুটি থাকা, প্রধান দুটি রক্তনালির বিপরীত স্থান থেকে উৎপন্ন হওয়া ইত্যাদি।

জন্মগত হৃদ্রোগের কারণ
শিশুর জন্মগত হৃদ্রোগের সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। তবে চিকিৎসকেরা কয়েকটি বিষয়কে শিশুর হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি হিসেবে বিবেচনা করেছেন। সেগুলো হলো—
•    ডাউন সিনড্রোমের মতো জিন এবং ক্রোমোজোমের ত্রুটি।
•    গর্ভাবস্থায় ক্ষতিকর ওষুধ সেবন, মাদক বা অ্যালকোহলের অপব্যবহার।
•    অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর প্রথম মাসগুলোয় ভাইরাল সংক্রমণ, যেমন রুবেলা। 
•    যদি মায়ের টাইপ ওয়ান বা টাইপ টু ডায়াবেটিস থাকে।
•    জন্মগত হৃদ্রোগ পরিবারে অনেক জেনেটিক সিনড্রোমের সঙ্গেও যুক্ত। যেমন: মারফান সিনড্রোম, টার্নার সিনড্রোম, নুনান সিনড্রোম ইত্যাদি। 
•    অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় ধূমপান।
লক্ষণসমূহ
•    জন্মের পরপর মায়ের দুধ টেনে খেতে কষ্ট হয়। 
•    কপালে ঘাম জমে এমনকি নীল বর্ণ ধারণ করে।
•    দুধ একটু খেয়ে ছেড়ে দিয়ে আবার টেনে খেতে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়ে।
•    শ্বাস নিতে গেলে পাঁজর দেবে যায়।
•    কাঁদলে বা খেলতে গেলে নীল বর্ণের শিশুরা হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পড়ে (সায়ানোটিক স্পেল)।
•    বারবার শিশুটির ঠান্ডা, কাশি ও নিউমোনিয়া হয়।
•    একই বয়সী অন্যদের মতো শিশুটির ওজন বাড়ে না।
•    নীল বর্ণের শিশুরা একটু বড় হলে তাদের নখ উঁচু হয়ে ফুলে যায়। 
•    দৈনন্দিন কাজ ও খেলাধুলা করতে গেলে ক্লান্ত হয়ে পড়ে। 
•    বুকে ব্যথা হতে পারে।
করণীয় কী
শিশুর জন্মগত হৃদ্রোগ দেখা দিলে বা সন্দেহ হলে দ্রুত শিশু হৃদ্রোগবিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হওয়া প্রয়োজন। দেরি করলে সাধারণ হৃদ্রোগও জটিল আকার ধারণ করতে পারে। জন্মগত হৃদ্রোগের অনেক ভালো চিকিৎসা এখন আমাদের দেশেই আছে। অপারেশনের মাধ্যমে বা অপারেশন ছাড়াই সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে এ ধরনের চিকিৎসা প্রদান করা হয়ে থাকে। প্রয়োজন সচেতনতা, সঠিক সময় সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় এবং সময়মতো তার যথাযথ চিকিৎসা।
লেখক: শিশু হৃদ্রোগবিশেষজ্ঞ, স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেড, ঢাকা

Side banner