নাইজেরিয়ার বেনু রাজ্যে বন্দুকধারীদের দুটি আলাদা হামলার ঘটনায় কমপক্ষে ৭৪ জন নিহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার স্থানীয় কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যরা বলেছেন, গত বুধ থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়েছে।
নাইজেরিয়ার মধ্যাঞ্চলের বেনু রাজ্যে রাখাল ও কৃষকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা খুবই পরিচিত। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ওই এলাকায় সহিংসতা বেড়েছে। জনসংখ্যা বেড়ে যাওয়ার কারণে আগের চেয়ে বেশিসংখ্যক জমিতে কৃষিকাজ করতে হচ্ছে। এতে গবাদিপশুর পাল চড়ে বেড়ানোর জন্য খোলা জায়গার পরিমাণ কমে যাওয়ায় রাখালেরা ক্ষুব্ধ হয়েছেন।
বেনুর রাজ্য পুলিশের মুখপাত্র ক্যাথেরিন আনেনে বলেন, মাগবান এলাকায় অভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তুদের জন্য স্থাপিত একটি আশ্রয়শিবির থেকে গত শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত ২৮ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
কী কারণে হামলা চালানো হয়েছে, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, বন্দুকধারীরা এসেই গুলি করা শুরু করে এবং কয়েকজনকে হত্যা করে।
এর আগে গত বুধবার একই রাজ্যের ওতুকপো স্থানীয় সরকার এলাকার দুর্গম গ্রাম উমোগিদিতে এক অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার অনুষ্ঠান চলার সময় সন্দেহভাজন রাখালদের হামলায় বেশ কয়েকজন গ্রামবাসী নিহত হন। ওতুকপোর চেয়ারম্যান বাকো ইজে রয়টার্সকে এসব কথা বলেছেন।
বেনু রাজ্যের গভর্নরের নিরাপত্তা উপদেষ্টা পল হেম্বা বলেছেন, বুধবারের হামলার পর ৪৬টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
গতকাল এক বিবৃতিতে নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুহাম্মাদু বুহারি বেনু রাজ্যে সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ড নিয়ে নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি ঘটনাস্থলগুলোতে নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
বেনু রাজ্যে যেমন হামলা হলো, নাইজেরিয়ার দুর্গম গ্রামগুলোতে এমন ঘটনা হরহামেশাই ঘটে। তবে সেগুলো সম্পর্কে কমই জানা যায়। কারণ, এসব অঞ্চলে নিরাপত্তা বাহিনীর নজরদারি তেমন থাকে না। স্থানীয় মানুষ হামলার ঘটনা জানালে অনেক পরে সেখানে নিরাপত্তা বাহিনী উপস্থিত হয়।
মধ্যাঞ্চলের বেনু রাজ্যে উত্তরে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিমদের এলাকা। আর দক্ষিণে সংখ্যাগরিষ্ঠ খ্রিষ্টানেরা। জমির মালিকানা নিয়ে এখানে দ্বন্দ্ব একটি সাধারণ ঘটনা। সেখানে রাখালদের সঙ্গে কৃষকদের দ্বন্দ্ব অনেক ক্ষেত্রে জাতিগত কিংবা ধর্মীয় সংঘাতে রূপ নেয়।
এদিকে জামফারা রাজ্যের বাসিন্দারা গতকাল বলেছেন, বন্দুকধারীরা সেখানকার অন্তত ৮০ জন বাসিন্দাকে অপহরণ করেছে।
আপনার মতামত লিখুন :