দক্ষিণ আফ্রিকায় সড়ক দুর্ঘটনায় ১০ বছরের এক শিশুসহ ৫ বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। স্থানীয় সময় শুক্রবার ভোররাতে ওয়েস্টার্ন কেপ প্রদেশের লোকানকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। আহত আরও দুই বাংলাদেশির মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
প্রিটোরিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে এসব তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
প্রিটোরিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসের দূতালয়প্রধান মো. কামরুল আলম খান আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে জানান, ওই বাংলাদেশিদের বহনকারী একটি প্রাইভেট কার ওয়েস্টার্ন কেপ থেকে কেপটাউন বিমানবন্দরে যাচ্ছিল। গাড়িটি বেফুর্ট ওয়েস্ট শহরের অদূরে লোকানকা নামের এলাকায় এলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি লরির নিচে ঢুকে যায়।
দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় পাঁচজনের। নিহত ব্যক্তিরা হলেন আবুল হোসেন (৪৫), তাঁর ছেলে নাদিম হোসেন (১০), রাজু আহমেদ (৩৪), ইসমাইল হোসেন (৩৮) ও মোস্তফা কামাল (৪০)। এ ছাড়া আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন বাংলাদেশগামী যাত্রী ফেনীর আনিসুল হক মিলন (৩৮) ও গোপালগঞ্জের নাহিদ আহমেদ (৩৫)।
নিহত ব্যক্তিদের সবার বাড়ি ফেনীতে। আবুল হোসেন ও নাদিম হোসেনের বাড়ি সোনাগাজী উপজেলার দক্ষিণ চর মজলিশপুর ইউনিয়নে। এ ছাড়া ইসমাইলের বাড়ি ফেনী সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নে, রাজু আহমেদের বাড়ি দাগনভূঞার মাতুভূঁইয়া ও মোস্তফা কামালের বাড়ি জায়লস্কর ইউনিয়নে।
নিহত ইসমাইলের স্বজন ও স্থানীয় সাংবাদিক শাহজালাল ভূঁইয়া জানান, দীর্ঘ ১০ বছর ধরে ইসমাইল দক্ষিণ আফ্রিকায় তাঁর এক ভাইকে নিয়ে একটি দোকান পরিচালনা করে আসছেন। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে ইসমাইল ছিলেন দ্বিতীয়। তাঁর বিয়ের কথা চলছিল। এ জন্য আগামী এপ্রিলে তাঁর বাড়িতে আসার কথা ছিল।
দুর্ঘটনায় নিহত মোস্তফা কামালের ভাই মোস্তফা জামান বলেন, মোস্তফা ১২ বছর ধরে দক্ষিণ আফ্রিকায় আছেন। চার ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়। তাঁর দুই সন্তান আছে।
রাজু আহমেদের স্বজনদের বরাত দিয়ে দাগনভূঞা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাসান ইমাম রাজুর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল হাসান জানান, নিহত আবুল হোসেন দীর্ঘদিন দক্ষিণ আফ্রিকায় ছিলেন। সেখানে গাড়ি চালাতেন তিনি। দুর্ঘটনায় তাঁর শিশুসন্তান নাহিদও মারা গেছে। নাহিদের জন্ম দক্ষিণ আফ্রিকায়।
জানতে চাইলে ফেনী জেলা প্রশাসক মাহমুদ উল হাসান বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের বাড়ি ফেনীর বিভিন্ন উপজেলায়। সংশ্লিষ্ট ইউএনওদের নিহত ব্যক্তিদের বাড়িতে গিয়ে স্বজনদের খোঁজ নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তিনি নিজেও সদরের বিরলী গ্রামে নিহত এক ব্যক্তির বাড়িতে রওনা হয়েছেন।
আপনার মতামত লিখুন :